সীমান্তের ওপারেও অমাবস্যায় জ্বলে ওঠে কালীপুজোর প্রদীপ !কথিত আছে এই মন্দির নাকি কেউ ভাঙতে পারেনি ! দেবী স্বয়ং রক্ষা করেন তার মন্দির...!

Prathamalorbarta
By -
0

পাকিস্তানের বুকে রয়েছে পনেরোশো বছরেরও পুরোনো মা কালীর মন্দির!জানেন কি, পাকিস্তানের বুকে রয়েছে এমন এক কালী মন্দির, যেখানে পুজো দিতে ভিড় করেন হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিমরাও । 

ধর্মের নামে বিভাজিত দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের ইতিহাসের মাঝেও, এই মন্দির যেন পারস্পরিক সহাবস্থানের এক অলৌকিক বার্তা দিয়ে চলেছে। জানেন এই মন্দির পাকিস্তানের কোথায় অবস্থিত? এই মন্দিরটি বালুচিস্তানের কালাট অঞ্চলে অবস্থিত এই মন্দিরের নাম তাই কালাটেশ্বরী মন্দির, যা পাকিস্তানের অন্যতম প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের মধ্যে একটি। প্রতিবছরই সীমান্তের ওপারে মুসলিম মহল্লার মধ্যেও অমাবস্যার রাতে হয় মাতৃ আরাধনা। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল এই পুজো নতুন নয়- প্রায় ১৫০০ বছরের পুরোনো এই কালাটেশ্বরী মন্দির আজও সীমান্তের বুকে অটুট।
ইতিহাসের পাতায় লেখা, বহুবার নাকি এই মন্দির ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই হাতে আসেনি। তাই স্থানীয়রা বিশ্বাস করে, দেবী কালির ঐশ্বরিক শক্তিই এই মন্দিরটিকে রক্ষা করে চলেছে। এই মন্দিরে, মা কালীর মূর্তি প্রায় ২০ ফুট উঁচু, দশভূজা রণ সাজে সজ্জিত,গলায় করোটির মালা, হাতে ত্রিশূল, ধনুক , গদা , ঢাল , শঙ্খ , চক্র এবং খঞ্জর ।কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিন দিনব্যাপী উৎসব পালিত হয় এখানে। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মাকে দর্শন করতে পুজো দিতে। এখানে ভিড়ের কারণে মা কালীর প্রতিমাকে কাঁচের ঘেরাটোপে রাখা হয়। প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় হয় ষোড়শোপচার পুজো এবং ভোগ নিবেদন। দেবীর মূর্তির পাশে রাখা রয়েছে শিখ গুরু নানকেরও ছবি, কারণ জনশ্রুতি আছে, বিভিন্ন সময়ে এখানে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন শিখ গুরু। পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মতে, মা কালীর এই মন্দিরটি পূর্ব ইসলামিক যুগে নির্মিত হয়েছিল। ধর্মীয় বিভাজনের এই বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে, বালুচিস্তানের কালাটেশ্বরী মন্দির এক বিরল উদাহরণ, যেখানে মা কালী কেবল তার ভক্তদেরই নয়, ধর্মকেও এক সূত্রে বেঁধে রেখেছেন। হিন্দু-মুসলিমের এই মিলন ভূমি এই মন্দির , আজও শান্তি বিশ্বাস ও সহাবস্থানের প্রতীক হয়ে আছে পাকিস্তানের বুকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)