ঘুম ভাঙলেই শরীরে কী ঘটে, যা বাড়ায় হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা? ভোর থেকে দুপুরের মধ্যে কেন হৃদ্যন্ত্র থাকে সর্বাধিক বিপদে? খালি পেটে কফি কি প্রাণঘাতী হতে পারে? চমকপ্রদ তথ্য দিলেন ডাক্তারসকালের কয়েকটি অভ্যাসেই মিলতে পারে হৃদ্রোগ থেকে সুরক্ষা!
আপনি কি জানেন, দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়েই সবচেয়ে বেশি মানুষ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন? শুনতে অবাক লাগলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর প্রায় ১৯.৮ মিলিয়ন মানুষ শুধুমাত্র হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। আর এই ঝুঁকির বড় কারণ লুকিয়ে আছে আমাদের সকালের জীবনযাত্রার মধ্যে। ঠিক ঘুম ভাঙার পর থেকে কয়েক ঘণ্টাই হৃদ্যন্ত্রের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সময়, বলছেন খ্যাতনামা হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সঞ্জয় ভোজরাজ।
তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ঘুম থেকে ওঠার সময় শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। এর ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, রক্তের প্লেটলেট আঠালো হয়ে ওঠে এবং হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সময়কে তিনি ‘হৃদ্রোগের উচ্চ সতর্কতা জানালা’ বলে উল্লেখ করেছেন। গবেষণাতেও দেখা গেছে, এই সময় হার্ট অ্যাটাক ও হঠাৎ হৃদ্যন্ত্র বিকল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এমনকি বিকেল ৫টা থেকে ৬টার মধ্যেও ঝুঁকির একটি ছোট বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।
ডাঃ ভোজরাজ সতর্ক করেছেন- সকালে যদি হঠাৎ অতিরিক্ত চাপ নেওয়া হয়, তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। যেমন খালি পেটে কফি খাওয়া, পানি না খাওয়া, নিয়মিত ওষুধ না খাওয়া অথবা ঘুম থেকে উঠেই কাজ শুরু করা। এগুলি হৃদ্রোগের ঝুঁকিকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
তাহলে সমাধান কী? বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হলো, ঘুম থেকে ওঠার পরপরই অন্তত এক গ্লাস জল খাওয়া উচিত। সময়মতো প্রেসক্রাইবড ওষুধ খাওয়া দরকার। নাশতায় অবশ্যই প্রোটিন থাকা উচিত, যাতে শরীর পর্যাপ্ত শক্তি পায়। এছাড়া সকালবেলা অন্তত ১০-১৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং হৃদ্যন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে।
অর্থাৎ, প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসই আমাদের প্রাণ বাঁচাতে পারে। সকালে নিয়ম মেনে চললে অনেকটাই কমানো সম্ভব হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। তাই সতর্ক হোন আজই, কারণ সামান্য অসতর্কতাই হতে পারে মৃত্যুর কারণ।

